নারী নির্যাতনের সূচনা আর ক্রমহ্রাস -লিংকন ভদ্র।
আপনি যে বিষয়েই জানতে চান না কেন?
সেজন্য আপনাকে বিষয়টাকে শুরু থেকে জানতে হবে।
আমরা যারা মানুষ তারা কিন্তু হঠাৎ করে সভ্য মানুষে পরিণত হইনি।
এই যে আজ আমরা যে সভ্য সমাজের বাসিন্দা তা কিন্তু একদিনে হয়নি।বিভিন্ন সভ্যতা কালক্রমে বিবর্তিত হয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছি আমরা।বিবর্তনবাদ এবং বিভিন্ন সভ্যতার ইতিহাস পড়ে আমরা প্রায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, প্রাচীনকালে আমাদের পূর্বপুরুষ বন-জঙ্গলে অসভ্য পশুর ন্যায় জীবন-যাপন করত।
আর ঠিক সে সময় থেকেই দুর্বল এর উপর সবলের কর্তৃত্ব করার একটা সাধারণ রীতি প্রচলন হয়ে আসছিল।যেমনটা আমরা সচরাচর পশু-পাখির মধ্যেও দেখে থাকি। স্বাভাবিকভাবেই নারীদের দুর্বলতা এবং সামাজিকভাবে হেয় অবস্থানের কারণে তাদেরকে প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত হতেই হত।
আস্তে-আস্তে জ্ঞান বিজ্ঞানের বিকাশ এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারের দরুন আমরা মেয়েদের মানুষ হিসেবে ভাবতে শুরু করেছি। তাদের দেওয়ার চেষ্টা করছি পুরুষের ন্যায় সমান সম্মান এবং অধিকার।
কিন্তু হে রমনীগণ, যে পুরুষের ডিএনএ তে মেয়েদের উপর কর্তৃত্ব এবং অত্যাচার করার বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান,তারা কি সহজে আপনাদের অধিকার দেওয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতার সাধ গ্রহন করতে দিবেন?
অবশ্যই দিবে, যদি তারা তথাকথিত পুরুষমানুষ থেকে মানুষে পরিণত হয়।
তাই নয় কি?সেটা স্বয়ং বিচার করুন।
তবে একথাও সত্যি,শিক্ষার প্রসার এবং মানবধর্মের সম্প্রসারণের দরুন এদেশে উত্তম চরিত্রের মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও এখনো প্রায় সবকিছুই নষ্টদের অধিকারেই আছে।
আর আপনি যদি ভাবেন নৈতিক এবং বাস্তবিক জ্ঞানহীন পুরুষ আপনাদের সহজে অধিকার তথা স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে দিবে, তাহলে সত্যিই আপনি বোকার স্বর্গে আছেন।
যে মেয়েরা পুরুষদের সেবা করাকে নিজেদের ব্রত মনে করে তাদের বলছি,
হে রমণীগণ আপনি কি জানেন?
এই পুরুষেরাই প্রথা আর পরম্পরার দোহাই দিয়ে আপনাকে দাসী করে রেখেছিল বহুকাল ধরে,এমনকি কেড়ে নিয়েছিল ন্যায্য অধিকার।
আপনি একটু ভেবে দেখুন তো,
আপনাদের যদি এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ সত্যিই ন্যায্য অধিকার এবং পুরুষের সমান মর্যাদা দিত তাহলে কেন ১৮৯৩ সালে নিউজিল্যান্ডের মেয়েরা সর্বপ্রথম ভোটাধিকার পায়?কেন ১৮৯৩ সালের আগে মেয়েদের ভোটাধিকার ছিল না?
তখন কি তারা মানুষ ছিল না?
আমি সমগ্র নারীজাতিকে উদ্দেশ্য করে বলছি,
নিজের অধিকারের বিষয়ে স্বয়ং সচেতন থাকুন আর দুরে থাকুন মানুষরূপী পুশুদের থেকে।
এখনকার ভোগবাদী মানুষের এই পৃথবীতে প্রকৃতপক্ষে কেউ কারো নয়।
আমি মনে করি, জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আপনাদের সচেতনতা,অাত্মনির্ভরশীলতা এই বৈষম্য দূর করার মহৌষধ।
ঠিক তখনি মুক্তি পাবেন আপনারা এবং সুন্দর হবে আপনাদের জীবন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
সাবাইকে নারী দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ♥
No comments